স্পিরিচুয়াল পাঠ দেওয়ার নামে যুবতীরকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার স্বঘোষিত ধর্মগুরু

যুবতীকে আশ্রমে রাখার নাম করে এক স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ। যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গোবিন্দবল্লভ শাস্ত্রীকে নামে ওই ধর্মগুরুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতকে কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ৷ গোবিন্দবল্লভ শাস্ত্রী নিজেকে বৃন্দাবনের মহারাজ বলে দাবি করেছেন। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ওই যুবতী অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ ৷ আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবতী মঙ্গলকোটের বাসিন্দা। তিনি গত ২০ জুলাই লিখিত অভিযোগ করে পুলিশকে জানায় ইউটিউব চ্যানেলে বৃন্দাবনের মহারাজ গোবিন্দবল্লভ শাস্ত্রী নামে এক ধর্মগুরুর ধর্মীয় পাঠ শুনে আকৃষ্ট হন। পরে ধর্মীয় পাঠ শোনার জন্য ২০২৩ সালে ওই যুবতী তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে বীরভূমের একটি জায়গায় যান। সেখানে তাঁর সঙ্গে ওই ধর্মগুরুর পরিচয় হয়। এরপর ফোনে যোগাযোগ বাড়তে থাকে। ওই বছরেই ফের ধর্মীয় পাঠ শোনার জন্য তিনি বেলডাঙাতে যান। সেখানে গোবিন্দবল্লভ শাস্ত্রী ওই যুবতীকে ব্রহ্মচর্য পালন করার নির্দেশ দেন। তাঁকে সারাজীবন আশ্রমে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। অভিযোগ এরপরেই মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ও নন্দীগ্রামে পাঠ শুনতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে তাঁকে ধর্ষণের করেন। এইভাবে লাগাতার চলতে থাকলে ওই যুবতী প্রতিবাদ করে। তখন ওই ধর্মগুরু ও তাঁর স্ত্রী ওই যুবতীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে থাকেন। এমনকি তাঁকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেন। ওই যুবতী অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরপরেই তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। ওই যুবতী বলেন, “আমি ইমোশনাল টক শো ফলো করতে গিয়ে যোগাযোগ করি। পরে জানতে পারি এইভাবে স্পিরিটুয়াল পাঠ দেওয়ার নামে বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে দিনের পর দিন সহবাস করেছে। অন্য মেয়েদের সঙ্গেও এই ঘটনা ঘটেছে। উনি আমার গুরুদেব। ওনার পাঠ শুনে আমি আকৃষ্ট হই। পরে আমাকে আশ্রমে রাখার নাম করে জোর করে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে থাকে ৷ এরপর তিনি অশ্লীল ভাষায় আমার সঙ্গে কথা বলতে থাকে।” তিনি আরও জানান, গুরুদেবের আদেশ আছে বলে, আমাকে তিনবার মেদিনীপুর নিয়ে যাওয়া হয়। যেহেতু শাস্ত্রের ব্যাপার তাই আমিও অমান্য করতে পারিনি। মাঝেমধ্যে আমি যেতাম না। তখন উনি রাগারাগি করতেন। পরে তার উদ্দেশ্য বুঝতে পারি। তিনি দিনের পর দিন আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করতে থাকে। এরপর আমি আর সহ্য করতে না পেরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করি। পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করি। পরে দেখি পুলিশ আমাকে সাহায্য করছে না। আমি আদালতের দ্বারস্থ হই। আমাকে মোটা টাকা দেওয়ার অফার করা হয়। আমি প্রত্যাখ্যান করি।