
রেশন দুর্নীতি কাণ্ডের মোট অঙ্ক ২০ হাজার কোটি টাকা, দাবি ইডির
রেশন দুর্নীতির মোট অঙ্কটা ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটিরই মালিক বর্তমানে ‘জেলবন্দি’ থাকা রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু)! এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোনওরকম নথি ছাড়াই বদলানো হয় বিদেশি মুদ্রায়। তারপর পাচার হয়ে যায় বিদেশে। শুধু তা-ই নয়, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর আরও ২ হাজার কোটি টাকা হাওলার মাধ্যমে বাংলাদেশ, দুবাই হয়ে চলে গিয়েছে সৌদি আরবের জেড্ডায়। সেকাজে সহযোগিতা করছিলেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য (ডাকু) স্বয়ং। শনিবার ব্যাঙ্কশালে ইডির বিশেষ আদালতে জমা দেওয়া রিমান্ডে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তদন্তকারীদের দাবি, ডব্লুবিইসিএসসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন প্রতি কুইন্টাল ধানের জন্য জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কমিশন নিতেন ২০ টাকা। এই কাণ্ডে ধৃত বাকিবুরকে জেরা করে এই তথ্য মিলেছে। শুক্রবার গভীর রাতে ম্যারাথন জেরার পর গ্রেপ্তার করা হয় শঙ্করবাবুকে। এদিন তাঁকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ইডির আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়ালে বলেন, গত মাসে (২০২৩-এর ডিসেম্বরে) এসএসকেএম হাসপাতালে বসে মেয়েকে একটি চিঠি লিখেছিলেন বালু। সিআরপিএফ অফিসারদের বাজেয়াপ্ত করা ওই চিঠিই তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। গত ১৯ ডিসেম্বর ইডির সামনে মন্ত্রী ওই চিঠির কথা স্বীকার করেছেন। এজেন্সি আদালতে জানিয়েছে, মেয়েকে মন্ত্রী লিখেছিলেন, টাকার দরকার হলে চারজনের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। তাঁরা হলেন-শঙ্কর আঢ্য (ডাকু), শেখ শাহজাহান, রবীন্দর ও অন্য একজন। রিমান্ডে বলা হয়েছে, বালু ও শঙ্কর প্রতিদিন একাধিকবার ফোনে কথা বলতেন। চলতি মাসে হীরামোতি এক্সপোর্ট প্রাইভেট লিমিটেডের অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। সংস্থাটি নিয়ন্ত্রণ করেন শঙ্কর। নামে-বেনামে তিনি ৯০টি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কোম্পানির মালিক। বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্টদের কাছ থেকে বিদেশে যাওয়া ব্যক্তিদের নথি সংগ্রহ করতেন শঙ্কর। এরপর সেগুলির সাহায্যে তোলা হতো ডলার বা ইউরো। নথি ছাড়া ব্যাঙ্কে নগদ ২৭০০ কোটি জমা করার অভিযোগে শঙ্করের কোম্পানির বিরুদ্ধে বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে (ফেমা) মামলা রুজু করেছিল ইডি।