
যোগীরাজ্যে ‘জঙ্গলরাজ-মাফিয়ারাজ’ চলছে! পুলিশ ও মিডিয়ার সামনেই আতিক খুনে কাণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলল তৃণমূল
‘জঙ্গলরাজ’, ‘মাফিয়ারাজ’। দুষ্কৃতীদের গুলিতে পুলিসি হেফাজতে থাকা গ্যাংস্টার আতিক আহমেদ ও তাঁর ভাই আশরাফের মৃত্যুর পর ফের এই তকমা সেঁটে গিয়েছে যোগীরাজ্যের গায়ে। শনিবার রাতের এই ঘটনায় দেশ যেমন উত্তাল, তেমনই প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিজেপিশাসিত এই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা। কেন বারবার উত্তরপ্রদেশেই এনকাউন্টারে বা পুলিসি হেফাজতে মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। যা অন্য মাত্রা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটে। তিনি লিখেছেন, ‘উত্তরপ্রদেশে যেভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে এবং নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে, তাতে আমি স্তম্ভিত। পুলিস এবং সংবাদমাধ্যমের সামনেই অপরাধীরা আইন হাতে তুলে নিয়েছে। এই ঘটনা লজ্জাজনক। সাংবিধানিক গণতন্ত্রে এই ধরনের বেআইনি কাজের কোনও জায়গা নেই।’ তাঁর আমলে উত্তরপ্রদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু প্রয়াগরাজে পুলিসি ঘেরাটোপের মধ্যে আতিফ ও আশরাফের খুন সেই দাবিকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেজন্য শনিবার রাত থেকেই উত্তরপ্রদেশের ৭৫টি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রবিবার প্রয়াগরাজের বেশ কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠানোর পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের বিচারবিভাগীয় কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন আদিত্যনাথ। কিন্তু তাতেও বিরোধীদের রোষের মুখে তিনি। আইন-শৃঙ্খলা ইস্যুতে যোগী সরকারের কড়া সমালোচনা করে সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘পুলিসি হেফাজতে আবার ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড। রাজ্যের সব জেলায় ১৪৪ ধারা। উত্তরপ্রদেশে কি রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পরিস্থিতি হয়নি? বিজেপি কী বলে? উন্নাও, হাতরাস, প্রয়াগরাজে খুন, ধর্ষণ, অত্যাচার, এনকাউন্টারের ঘটনা ক্রমাগত ঘটেই চলেছে। এইসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে না কেন!’ দলের এমপি মহুয়া মৈত্রের চাঁচাছোলা আক্রমণ, ‘বিজেপি দেশটাকে মাফিয়া রিপাবলিক বানিয়ে ছেড়েছে। আমি একথা এখানে বলব, বিদেশেও গিয়ে বলব। পুলিসি হেফাজতে দুষ্কৃতীদের হাতে দু’জন খুন— এটা আইনের শাসনের মৃত্যু।’ একযোগে সুর চড়িয়েছে বাম-কংগ্রেসও। প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর টুইট, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আইনের শাসন এবং বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে খেলা করা বা তাকে লঙ্ঘন করা গণতন্ত্রের জন্য ঠিক নয়।’ আর সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘বিজেপির যোগী সরকারের আমলে জঙ্গলরাজই ইউএসপি।’