
‘ডুয়ার্সের ৬টি বন্ধ চা-বাগান অধিগ্রহণ করবে রাজ্য সরকার’, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
জলপাইগুড়িতে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছ’টি চা-বাগান। যে কারণে সমস্যায় পড়েছেন শ্রমিকরা। সেই শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে সোমবার বন্ধ হয়ে যাওয়া চা-বাগান গুলি অধিগ্রহণ করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ডুয়ার্সের বন্ধ ৬টি বাগান আমরা নিয়ে নিচ্ছি। উত্তরবঙ্গে আগে কিছুই ছিল না। এখন সব করে দিয়েছি”।সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে জলপাইগুড়িতে রয়েছেন তিনি। এদিন বানারহাটে জনসভার মঞ্চ থেকে এই কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বন্ধ হওয়া ছটি চা বাগান সরকার নিয়ে নেবে। আর বন্ধ হওয়া চা বাগানের শ্রমিকদের মাসে দেড় হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়েও এদিন ফের মুখ খোলেন তিনি। বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যাব। একশো দিনের কাজের ৭ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। এটা আমাদের অধিকার। আজ রবিবার আলিপুরদুয়ারে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান থেকেও চা শ্রমিকদের বিনামূল্যে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য পরিষেবা বিনামূল্যে দেওয়ার কথা জানান তিনি। রাজ্যের একাধিক পরিষেবার সুবিধা সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “১১০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন হল এই মঞ্চ থেকে। ৬৯ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস হল। ধূপগুড়ির মানুষের কাছে বলেছিলাম, ধূপগুড়ি সাব ডিভিশন আমরা করব। পশ্চিম্বঙ্গ সরকার থেকে এটা করে দিয়েছি কিন্তু কোর্টে বাকিটা পড়ে রয়েছে। আমরা একাধিক উন্নয়নের কাজ করেছি এই জেলায়। একাধিক নতুন ব্লক তৈরি হয়েছে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে। নতুন বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে৷ বাংলাদেশ ভূটান এশিয়ান হাইওয়ে তৈরি হয়েছে৷ দেবী চৌধুরানীর মন্দির তৈরি হয়েছে। ৪ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষের পানীয় জলের সমস্যা মেটানো আমার লক্ষ৷ আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হবে।” এদিন বানারহাটে নতুন ফায়ার স্টেশন তৈরির নির্দেশ দেন মুখ্যসচিবকে। মমতা আরও বলেন,”এই মঞ্চ থেকে ২৬ হাজার মানুষকে বেনিফিট দেওয়া হচ্ছে৷ ১৩ হাজার পাট্টা দিয়েছি সব মিলিয়ে। উদবাস্তুরাও জমির পাট্টা পাবেন। বন্ধ চা বাগান সব আমরা খুলব। শ্রমিকদের কোনও চিন্তা নেই। ১ হাজার ৬৯৯ টা ফ্রি হোল্ড রাইটস দিচ্ছি। ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা রাজ্য সরকার দেবে। পাট্টার দেওয়া জমিতে ঘর বানানোর জন্য৷ সেখানে হোমস্টে থেকে কিচেন গার্ডেন করতে পারেন। নির্বাচনের আগে থেকে ফ্রি রেশনের কথা বলেছিলাম সেটা দিচ্ছি।” বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, “কোথায় গেলে ১৫ লক্ষ টাকা? চা বাগান অধিগ্রহণ করবে বলেছিল৷ কোথায় গেল সেগুলো? কথা দিয়ে আমি কথা রাখি৷ সব ধর্ম সব বর্ণের জন্য আমরা কাজ করছি। জলপাইগুড়ি জেলায় একদিকে বাগান। অন্যদিকে অরণ্য৷ পর্যটনে উত্তরবঙ্গে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে আবার দুয়ারে সরকার হবে৷ পরিবারের কোন এক জনেরও জন্য যদি আদিবাসী সার্টিফিকেট থাকে, তবে সেও পাবে৷ কেউ ভুয়ো সার্টিফিকেট বানালে আমাদের জানান, তার সংশোধন হবে৷” মুখ্যমন্ত্রী জানান, “অনুষ্ঠানে আমাকে অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, সেগুলো আমরা রিভিউ করছি। আগামীকাল শিলিগুড়ি থেকে প্রায় ১২০০ কোটি টাকা কৃষক বন্ধুদের আমরা চেক মারফত পাঠাব৷”