
আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়, সোমবার সাজা ঘোষণা
আর জি কর হাসপাতাল থেকে উদ্ধার হয় তরুণী চিকিৎসকের দেহ। কর্তব্যরত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। তারপর কেটে গিয়েছে বেশ কিছুদিন। এরপর আজ ১৬২ দিনের মাথায় ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করল শিয়ালদহ আদালত। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আজ, শনিবার বিচারক অনির্বাণ দাসের এজলাসে বহু প্রতীক্ষিত এই মামলার রায়দান হয়। জানা গিয়েছে, আগামী সোমবার সাজা ঘোষণা করা হবে। তার আগে ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় দোষীর বক্তব্যও শুনবেন বিচারক। তবে এদিনও সঞ্জয় রাই নিজেকে নির্দোষ বলেই দাবি করেছে। তাঁর বক্তব্য, এই কাজ একার পক্ষে করা আদৌ সম্ভব নয়। তবে বিচারক বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগেরই প্রমাণ রয়েছে। গত বছর ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে শহর কলকাতা সহ গোটা দেশই উত্তাল হয়ে ওঠে। সিবিআই তদন্ত, বিচারের দাবিতে আন্দোলন, সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ-একের পর এক ঘটনাক্রম। আর আজ, শনিবার সেই মামলার রায় ঘোষণা হল। গতকাল, শুক্রবারই জানা গিয়েছিল, শিয়ালদহ আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস শনিবার দুপুর ২টো ৩০ মিনিট নাগাদ রায় ঘোষণা করবেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শনিবার দুপুরে রাজ্যবাসীর নজর থাকবে শিয়ালদহ আদালতের দিকেই। ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় কি দোষী সাব্যস্ত হবে? ফাঁসির নির্দেশ দেবেন বিচারক? গতকাল থেকেই এসব প্রশ্নে জোর চর্চা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে। এই আবহে রায়দান পর্ব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে এদিন আদালত চত্বরের নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক রাখেনি পুলিস। শুক্রবারই তারা শিয়ালদহ কোর্টের লকআপ সহ গোটা চত্বর খুঁটিয়ে দেখে। আদলতের বাইরে বড় জমায়েত হতে পারে। সেই কথা মাথায় রেখে মোতায়েন ছিল বিশাল বাহিনী। তবে নিরাপত্তার দায়িত্বে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারকে রাখা হয়নি। মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর তদন্ত নেমে কলকাতা পুলিসই গ্রেপ্তার করে সিভিক ভালন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। পরে হাইকোটের নির্দেশে মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে সিবিআই। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পেশ করা হয় চার্জশিট। শিয়ালদহ কোর্টের রুদ্ধ এজলাসে চলে শুনানি। সাক্ষ্য দেন মোট ৫০জন। সিবিআইয়ের কৌঁসুলি পার্থসারথি দত্ত ধৃতের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানান আদালতে। সঞ্জয়ের তরফে লিগ্যাল এইড থেকে নিযুক্ত কবিতা সরকার তদন্তে গাফিলতির কিছু বিষয় তুলে ধরেন। সওয়াল শেষ হয় গত ৯ জানুয়ারি। তারপরই বিচারক রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।