স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে দুর্নীতিতে ১০২টি হাসপাতালকে শো-কজ, ৫৩টি হাসপাতালকে জরিমানা প্রায় ১১ কোটি

স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কোনও অনিয়ম যে বরদাস্ত করা হবে না, তা আগেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও হাসপাতাল এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত না হলে বাতিল হবে লাইসেন্স। তাই স্বাস্থ্যসাথীর আওতাভুক্ত প্রাইভেট হাসপাতালগুলির উপর নজরদারি চালাতে বছর দেড়েক আগে জেলা ও রাজ্যওয়াড়ি কমিটি গড়েছিল স্বাস্থ্যভবন। তারা লাগাতার পরিদর্শন চালিয়ে হাতেনাতে ধরছে একের পর এক দুর্নীতি, অনিয়ম। এক ক্যাটিগরির হাসপাতাল হয়ে অন্য ক্যাটিগরির বিল করা, কার্ড জমা রেখে বিল বাড়ানো, প্যাকেজের বাইরে গিয়ে বিল করা, এক অপারেশনের কথা বলে অন্য চিকিৎসা করানো—এরকম গুচ্ছ গুচ্ছ অপকর্ম ধরা পড়েছে। সূত্রে খবর, এই সব কারণে গত দেড় বছরে ১০২টি হাসপাতালকে শোকজ করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ৫৩টি হাসপাতালকে। সব মিলিয়ে প্রায় ১১ কোটি টাকা (১০ কোটি ৯২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৮৭৮ টাকা) জরিমানা করা হয়েছে। চোখে চোখ রেখে আদায় করা হয়েছে ৭ কোটি ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৪০০ টাকা। বাকি প্রায় সাড়ে ৩ কোটি ৭ লক্ষ টাকা আদায়ে ঝাঁপিয়েছে দপ্তর। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, কোনও ছাড়াছাড়ি নয়। অভিযান চলবে।  এদিকে, প্রকল্পে যুক্ত না হলে লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারিতে আরও ৭০০ প্রাইভেট হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথীর আওতাভুক্ত হয়েছে। এর ফলে পরিষেবার আওতায় এল ২২০০ প্রাইভেট হাসপাতাল। কোভিডের আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালেও সংখ্যাটা ছিল ১৫০০। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে এখন এই প্রকল্পে যুক্ত ২৭০০ হাসপাতাল।  মঙ্গলবার প্রকল্পের এক কর্তা দাবি করেন, সল্টলেকের একটি অভিজাত প্রাইভেট হাসপাতাল ছাড়া রাজ্যের ছোট, মাঝারি, বড় প্রায় সমস্ত প্রাইভেট হাসপাতাল এখন স্বাস্থ্যসাথীতে যুক্ত হয়েছে। সল্টলেকের হাসপাতালটি জানিয়েছে, তাদের ওয়ার্ড বা সিঙ্গল রুম বলে কিছু নেই। সবই কেবিন। আর স্বাস্থ্যসাথী কেবিনের ভাড়া দেয় না। তাই ওরা এখনই যুক্ত হতে পারছে না। এই হিসেব স্রেফ পরিসংখ্যান নয় তো? ওই কর্তা বলেন, ‘ছানি, প্রসব, হার্নিয়া, ফিশার ইত্যাদি চিকিৎসা এখন স্বাস্থ্যসাথীতে হয় না। রাজ্যের বহু হাসপাতাল টিকেই থাকে হার্নিয়া আর ফিশার অপারেশন করিয়ে। চোখের বহু স্পেশালিটি ও মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে ছানি অপারেশন প্রচুর হয়।  এসব হাসপাতাল তো স্বাস্থ্যসাথীর রোগী ভর্তি করতে পারছে না। ফলে খাতায়কলমে বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যাটা ২২০০ হলেও বাস্তবে হয়তো হাজার দু’য়েক হবে।’

error: Content is protected !!