ভাঙড়ে অশান্তি নিয়ে ওসিদের কড়া বার্তা দিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা

পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন পুলিশ যেন পিছিয়ে না আসে। কড়া হাতে সমস্ত অশান্তি মোকাবিলা করে। ভাঙড়ে এসে পুলিশকর্মীদের মনোবল বাড়াতে এমনই বার্তা দিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভাঙড়ে আর কোনও অশান্তি, গোলমাল সহ্য করা হবে না বলেও স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে যান সিপি। গত সোমবার ওয়াকফ বিল নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙড়ের পোলেরহাট ও উত্তর কাশীপুর থানা এলাকা। সেই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাঙড়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসেন পুলিশ কমিশনার। এ দিন বিকেলে শোনপুর বাজার পরিদর্শনের সময় সিপির সঙ্গে ছিলেন কলকাতা পুলিশের দেবেন্দ্র প্রতাপ সিং, শুভঙ্কর সিনহা সরকার, রূপেশ কুমার সহ শীর্ষ আধিকারিকরা। এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। নিচুতলার পুলিশকর্মীদের থেকে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিপি। তিনি বারবার বলেন, ‘পুলিশকে লড়াই করতে হবে, পিছু হটলে চলবে না।’ সেই সঙ্গে তিনি জানান, ভাঙড় ডিভিশনের জন্য অতিরিক্ত ফোর্স এবং গাড়ি বরাদ্দ করা হবে। গত সোমবার ধর্মতলা অভিমুখে আইএসএফ-সহ একাধিক মুসলিম সংগঠনের মিছিলের ডাক দেওয়া হলেও পুলিশের অনুমতি না থাকায় বাসন্তী রাজ্য সড়কে মিছিলের গাড়ি আটকানো হয়। এরপর বিক্ষোভকারীরা অবরোধে বসে। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে শুরু হয় উত্তেজনা। ইটবৃষ্টি, খণ্ডযুদ্ধের পাশাপাশি পুলিশকে নিশানা করে আক্রমণ চালানো হয়। ঘটনায় বেশ কিছু পুলিশকর্মী আহত হন। পাল্টা পুলিশ লাঠিচার্জ করলে বিক্ষোভকারীদেরও অনেকে আহত হয়। উত্তেজনা ছড়ায় শোনপুর বাজারে। সেখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়, ব্যারিকেড ভাঙা হয় এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাস্তার উপরে ট্র্যাফিক পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরাও ভেঙে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশ ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ ইলিয়াস মোল্লা, সাবির মোল্লা, রফিকুল মোল্লা নামে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রত্যেকের বাড়ি উত্তর কাশীপুরে। এ দিন উত্তর কাশীপুর থানা ছাড়াও নলমুড়িতে ডিসি অফিসে বৈঠক করেন মনোজ।‌ পরে তিনি বলেন, ‘ভাঙড় ডিভিশনের জন্য নতুন থানা এবং পুলিশ লাইন তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খুঁজে বের করে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ৮টি থানা নিয়ে ভাঙর ডিভিশন ১৫ মাস আগে চালু হলেও পরিকাঠামোর অভাবে বোদরা, নারায়ণপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার এবং হাতিশালা থানা এখনও চালু করা যায়নি। সেই চারটি থানা এবং এক ব্যাটেলিয়ন রিজার্ভ ফোর্স রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো দ্রুত তৈরি করার উদ্যোগ নিলেন পুলিশ কমিশনার।

error: Content is protected !!