এবার স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে পুলিশ-ডাক্তার-নার্সের পোশাক তৈরি করাতে চান মুখ্যমন্ত্রী

সরকারি স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের পোশাক তৈরির কাজে সফল স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি । এ বার তাদের মাধ্যমে পুলিশ, ডাক্তার ও নার্সের পোশাক তৈরি করাতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । করোনার সময় থেকেই এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কাজে লাগিয়ে মাস্ক ও স্যানিটাইজারের যোগান পর্যাপ্ত রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । বছরভর যাতে তারা কাজ করতে পারে সেই জন্য এ বার এই নতুন ভাবনা তাঁর । তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সরকারি কাজকর্মের খরচ কমানোর চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী । সেইমতো স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে এ বার পুলিশ, ডাক্তার ও নার্সের পোশাক তৈরির বরাত দিতে চাইছে রাজ্য সরকার । মঙ্গলবার বাঁকুড়ার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে এমনই ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । প্রসঙ্গত, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পোশাক তৈরির বরাত এ বছর দেওয়া হয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে । এ ক্ষেত্রে সরকারের যুক্তি, এতে যেমন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজের বরাত মিলছে, তেমনই সরকারি খরচও অনেকটা কমে আসছে । এমনিতেই কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ । সরকারকে বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের টাকা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে বারবার জানানো হয়েছে । এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দিয়ে এই কাজগুলি করালে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের মতো প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে । এ দিন প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুলিশের জন্য অনেক পোশাক তৈরি করতে হয় । সেই কাজ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া যেতে পারে । জবাবে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বলেন, হাসপাতালের নার্সদের ইউনিফর্ম, ডাক্তারদের অ্যাপ্রন, কারারক্ষীদের পোশাক ইত্যাদিও স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে তৈরি করানো যায় । ইতিমধ্যেই স্কুল ইউনিফর্ম তৈরির ক্ষেত্রেও তারা ভালো কাজ করছে । স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে স্কুল পড়ুয়াদের পোশাক তৈরির জন্য বাঁকুড়ায় একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে । তিনি নিজে সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন । মুখ্যসচিব আরও বলেন, এই মুহূর্তে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ভালো কাজ করছে, তবে তাদের আরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে । এখানেই শেষ নয়, মুখ্যসচিব আরও বলেন, স্কুল পোশাক তৈরির কাজে এখনও পর্যন্ত প্রায় 80 হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে যুক্ত করা হয়েছে । আরও অনেক স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে পোশাক তৈরির কাজে যুক্ত করা যেতে পারে । মুখ্যসচিবের এই প্রশংসার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যেহেতু এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকার 100 দিনের কর্মীদের টাকা দিচ্ছে না, তাই তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পোশাক তৈরির কাজে ব্যবহার করা যায় কি না তা দেখতে হবে । মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, পঞ্চায়েতের বা জেলা পরিষদের বিভিন্ন কাজে এই 100 দিনের কর্মীদের ব্যবহার করা যায় কি না তাও দেখতে হবে । তাঁর বক্তব্য, যাঁরা 100 দিনের কাজ করেন, সকলেই গরিব মানুষ ৷ টাকা না পেলে খাবেন কী !

error: Content is protected !!