প্রধানমন্ত্রী এবং দিলীপের ভাষণই ষড়যন্ত্রের প্রমাণ! নন্দীগ্রাম কাণ্ডে কমিশনে যাচ্ছে তৃণমূল

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের আহত হওয়ার ঘটনার পেছনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে আগেই সরব হয়েছে তৃণমূল ৷ রাজ্য নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছে তারা ৷ এ বার সেই দাবিকেই আরও জোরদার করতে দিল্লি যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল ৷ রাজধানীতে নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে গিয়ে তারা বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলে ধরবে ৷ প্রমাণ হিসেবে তারা সঙ্গে রেখেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতার বক্তব্যের ক্লিপিংস ৷  রাজ্য নির্বাচন অফিসে গিয়ে নিজেদের অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল ৷ সেই দলে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ৷ সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের পার্থ বলেন, “প্রথমে এডিজি আইনশৃঙ্খলাকে অপসারণ করা হল ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের প্রার্থী হওয়ার পর অপসারিত হলেন ডিজি ৷ আর তার ঠিক পরই দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর উপর এমন আঘাত নেমে এল ৷ বিজেপি সাংসদদের বক্তব্যে আগেই এটা পরিষ্কার ছিল যে তৃণমূল নেত্রীর উপর আক্রমণ হতে পারে ৷ এই হামলার দায়িত্ব কার ? রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে রাজ্যকে নিয়ন্ত্রণের এই প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করছি ৷” এরপর কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় অভিযোগ করেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রিগেডের সমাবেশে বলেছিলেন, ‘ভবানীপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর স্কুটার যদি নন্দীগ্রামে গিয়ে কোনও দুর্ঘটনায় পড়ে, তবে তার দায় বিজেপি নেবে না’, আর প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তৃতার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর উপর হামলার ঘটনা ঘটল।” এর থেকেই তৃণমূল ষড়যন্ত্রের সন্দেহ করছে ৷ প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ-র মন্তব্যও তুলে ধরেছেন সৌগত রায় ৷ তিনি বলেন, “বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও যুব মোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খাঁও বলেছিলেন, ‘10 তারিখের পর কী হবে দেখতে পাবেন’। ঠিক 10 তারিখেই মুখ্যমন্ত্রীর উপর এমন হামলার ঘটনা ঘটল ।” এই বক্তব্যগুলির ফুটেজ সংগ্রহ করে দিল্লি নিয়ে যাচ্ছেন সৌগত রায়, বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, জয়নগরের প্রতিমা মণ্ডল, বীরভূমের শতাব্দী রায় ও রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন ৷ বিজেপি উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ জানাবে তৃণমূল ৷এ ছাড়াও ভোটের মুখে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের রদবদল নিয়েও প্রশ্ন তুলে কমিশনকে জানাবে তৃণমূল ৷ আজ বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে যাচ্ছে তৃণমূল ৷ যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে তাদের কমিশনের পাল্টা কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে ৷ নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে যে, বুধবার সন্ধ্যার সমস্ত রিপোর্ট ও ভিডিয়ো খতিয়ে দেখা হয় ৷ তার পরই তৃণমূল কংগ্রেসকে ভর্ৎসনা করে জবাব দেয় কমিশন ৷ তারা জানায়, তৃণমূলের অভিযোগ একেবারেই অনৈতিক । কারণ, নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ সংস্থা । এইভাবে আঙুল তোলা মানে হল নির্বাচন কমিশনের মৌলিক অধিকারকে সন্দেহ করা । 

error: Content is protected !!