এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হল মুখ্যমন্ত্রীকে, রিপোর্ট তলব করল নির্বাচন কমিশন
নন্দীগ্রামে গিয়ে চোট পাওয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভর্তি করা হল এসএসকেএম হাসপাতালে। নন্দীগ্রাম থেকে গ্রিন করিডোর করে কলকাতায় আনা হল তাঁকে। উডবার্ন ওয়ার্ডে ভিভিআইপিদের জন্য সংরক্ষিত সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁর চিকিত্সার জন্য ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ওই মেডিক্যাল বোর্ডে প্রথিতযশা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সরোজ মণ্ডল সহ বিভিন্ন বিভাগের প্রবীণ চিকিত্সকরা রয়েছেন। হাসপাতালে উপস্থিত রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি সহ তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। আজ সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে মন্দির দর্শনের সময়ে আঘাত পাওয়া মুখ্যমন্ত্রীকে যুদ্ধকালীন তত্পরতায় গ্রিন করিডর করে সোজা কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। রাত পৌনে নয়টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছয় মমতার গাড়ি। আগেভাগেই প্রস্তুত রাখা হয়েছিল উইল চেয়ার ও স্ট্রেচার। আহত মুখ্যমন্ত্রীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে উইল চেয়ারে চাপিয়ে নিয়ে লিফটে করে নিয়ে যাওয়া হয় উডবার্ন ওয়ার্ডে। সময় নষ্ট না করে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা মুখ্যমন্ত্রীর চিকিত্সা শুরু করেন। চিকিত্সকদের মুখ্যমন্ত্রী জানান বা পাঁয়ে, কাঁধে ও কোমরে চোট পেয়েছেন। অসহ্য যন্ত্রণা রয়েছে। চোট কতটা গভীর তা জানতে সঙ্গে সঙ্গেই পোর্টেবল এক্সরে মেশিনের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক যন্ত্রণা কমাতে ব্যথার ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয়। আপাতত তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিত্সকরা। চোট কতটা গুরুতর, দেখতে পায়ের এক্স-রে করছেন চিকিত্সকরা। মুখ্যমন্ত্রীর অসুস্থতা নিয়ে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে রাজি হননি দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিত্সকরা। অন্যদিকে, এদিন দলনেত্রীর অসুস্থতার খবর পেয়েই হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হন অসংখ্য তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন তৃণমূল কর্মীরা বিজেপির বিরুদ্ধে স্লোগানও দেন। ক্ষুব্ধ দলীয় কর্মীদের শান্ত করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। এর মধ্যেই হাসপাতালে এলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করল নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, ঘটনার পরই কমিশনের পক্ষ থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান মুখ্যমন্ত্রী। তা সত্ত্বেও খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এহেন ঘটনা রীতিমতো চিন্তা বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশনের। জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করে জানতে চাওয়া হয়েছে, কখন এই ঘটনা ঘটল। কীভাবেই বা নিরাপত্তার বেড়াজাল টপকে অত কাছে পৌঁছে গেলেন ওই তিন-চার ব্যক্তি? আদতে কী ঘটনা ঘটেছিল তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য চাওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। গত কালই রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্রকে বদলি করা হয়েছে। তাঁর বদলির ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই এই ঘটনা ঘটল। কেন স্থানীয় পুলিশ ছিল না? পুলিশ পর্যবেক্ষকরাই বা কি করছেন? উঠছে প্রশ্ন!