‘নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর ওপর হামলা হয়নি’, কমিশনকে রিপোর্ট বিশেষ পর্যবেক্ষকের

মুখ্যমন্ত্রীর ওপর হামলা হয়নি, কমিশনকে রিপোর্ট বিশেষ পর্যবেক্ষকের। আর এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা রাখতে হবে বলে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জগমোহনের। নন্দীগ্রামের ঘটনার পর এই ধরনের ঘটনা এড়াতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বাকি স্টার ক্যাম্পেইনারদের জন্যও আটোসাটো নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে। নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনরকম গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। গত বুধবার নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা হিসাবে তুলে ধরে রাজ্যের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তাঁর রিপোর্টে বলা হয়েছে এই ঘটনায় হামলার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তা স্বত্বেও নির্বাচন কমিশন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশের কাছে গোটা ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে। মূলত গাড়ির দরজায় কিভাবে ধাক্কা লাগল, কারা ধাক্কা দিল এবং কিভাবে গাড়ির দরজা বন্ধ হল এই তিনটি বিষয় পরিষ্কার ভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে। মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় সেই রিপোর্ট কমিশনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক এবং বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে যে রিপোর্ট পেশ করেন তাতে কোথাও হামলার কথা উল্লেখ করা হয়নি। রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে নিছক দুর্ঘটনা থেকেই আগাত লাগে মুখ্যমন্ত্রীর। এর পেছনে কোনও ষড়যন্ত্র নেই। জেলা প্রশাসনের তরফে যে রিপোর্ট কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছিল তাতেও বলা হয়েছিল দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই আঘাত লাগে মুখ্যমন্ত্রীর। নবান্নের তরফেও প্রথম যে রিপোর্টটি দেওয়া হয়েছিল তাতে হামলার কথা উল্লেখ ছিল না। যদিও নবান্ন সূত্রে খবর, কমিশনের তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিবের দেওয়া রিপোর্টটিতে নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট হয়নি ফলে তাঁরা ফের একবার রিপোর্ট তলব করেছে মুখ্যসচিবের কাছে। আর দ্বিতীয় দফার রিপোর্ট তৈরি করে পাঠানো হয় নির্বাচন কমিশনে। কমিশনের তরফে যে রিপোর্ট সামনে আনা হচ্ছে তা মুখ্যসচিবের দেওয়া প্রথম দফার রিপোর্টের ভিত্তিতে তৈরি করা। দ্বিতীয় দফায় যে রিপোর্টটি পাঠানো হয়েছে তা থেকে এখনও নির্বাচন কমিশন রিপোর্ট তৈরি করেনি। অপরদিকে, নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর আঘাত লাগার ঘটনা নিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা রাজ্যে। কিভাবে আঘাত লাগল তা নিয়েই বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করে নানা প্রশ্ন। যদিও নন্দীগ্রামে সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর ওপর হামলা হয়েছে অভিযোগ আনা হলেও কমিশনের তরফে সে বিষয়ে তৃণমূলকে পরে তুলোধনা করা হয়। উল্লেখ্য, সেদিন আঘাত পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন চার পাঁচজন পরিকল্পিত ভাবে তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে। কিন্তু তারপর এ ব্যপারে আর নিজে মুখ খোলেননি তিনি।হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে যে বার্তা দিয়েছিলেন, সেখানে হামলার বিষয়ে কোনও কথা একবারও বলেননি। ভিড়ের চাপে দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে জানান তিনি। যদিও তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস হামলার তত্বে অনড় রয়েছে। 

error: Content is protected !!